ডেনিম জিন্সের বর্জ্য |
এই বিষয়ে আলোচনার
পূর্বে আমাদের
প্রথমত জানা
দরকার পরিবেশ
বান্ধব টেক্সটাইল
কথাটি কি
অর্থ বহন
করে।
শুধু টেক্সটাইল না
পরিবেশ বান্ধব
কথাটি আরও
অনেক জায়গায়
ব্যাবহৃত হয়
, যেকোন বস্তু
বা সামগ্রী
তৈরি থেকে
শুরু করে
তার ব্যাবহার
ও ব্যাবহার
হওয়ার পর
পর্যন্ত যদি
তা পরিবেশ
ও মানব স্বাস্থের জন্য
কোন ক্ষতির
কারন না
হয় তাহলে
তাকে পরিবেশ
বান্ধব বলা
হবে ।
অতএব টেক্সটাইল সামগ্রীর
ক্ষেত্রে ফাইবারের
উৎস ফসল
উৎপাদনের প্রক্রিয়া
হতে হবে
পরিবেশ বান্ধব
অর্থাৎ তাতে
কোন ক্ষতিকর
রসায়ন ও
কীটনাশক ব্যাবহার
করা যাবে
না ।
সেই সাথে
ফাইবারের প্রোসেসিং
থেকে ডাইং,ফিনিশিং অবধি
কোন দূষণকারী
কেমিক্যালের ব্যাবহার হবে না এবং
এথেকে উৎপন্ন
বর্জ্য মিশ্রিত
পানি আশেপাশের
জলাশয়কে দূষনের
কারন হবে
না ইত্যাদি
।
ইকো ফ্রেন্ডলি টেক্সটাইল
তৈরিতে সবচেয়ে
গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনার বিষয় এগুলোই যে,
তৈরির প্রথম
থেকে শেষ
পর্যন্ত কোন
কোন ধাপে
পরিবেশ দূষণ
হতে পারে
।
ডেনিম উৎপাদনে বিশ্বে
চীনের পরই
বাংলাদেশ ।
বর্তমানে বাংলাদেশে
প্রতি মাসে
প্রায় ২০
মিলিয়ন গজের
সমান ডেনিম
কাপড় তৈরি
হয়ে থাকে
। ডেনিমের যোগানদাতা প্রধানত
চীন ও
বাংলাদেশ হলেও
এর প্রধান
ভোক্তা উন্নত
দেশগুলো । গড়ে অ্যামেরিকার
এক জন
৮
টি করে
ডেনিম জিন্স
প্যান্ট থাকে
।এখন প্রশ্ন হল চাহিদার
দিক দিয়ে
এতো এগিয়ে
থাকা সত্ত্বেও
উন্নত দেশগুলো
উৎপাদনে পিছিয়ে
কেন ?যে ব্যাপারটি ডেনিম
উৎপাদনের সাথে
অঙ্গাঙ্গীভাবে জরিত তা হল পরিবেশ
দূষণ, আর
উন্নতদেশগুলোতে এই ব্যাপারটিকে খুব বেশি গুরুত্বের সাথে দেখা হচ্ছে সেখানে তৃতীয়
বিশ্বের উন্নয়নশীল
দেশ বাংলাদেশ
ও চীন
তার কোন
তোয়াক্কা না
করে দূষণকারী
শিল্পের সাফল্য
নিয়ে মহা
উচ্ছ্বসিত ।ফলশ্রুতিতে আজ আমাদের
দেশের শিল্প
এলাকা গুলোর
অবস্থা এতোটাই
শোচনীয় যে
সেখানে মানুষকে
পানীয় জলের
বিশুদ্ধতা নিয়েও নানাভাবে আপোশ করতে
হচ্ছে ।
ডেনিম শিল্প কিভাবে পরিবেশ দূষণ ঘটায় ?
ডেনিম জিন্স প্রস্তুতির
একটি উল্লেখযোগ্য
অংশকে বলা
হয় স্টোন
ওয়াশ যাতে
জিন্স কে
ভল্কানিক পিউমিচ
পাঁথরে ঘর্ষণ করানো হয়
। এর জন্য যে বিশাল
পরিমাণে পাথর
দরকার হয়
তার জন্য
ভুপৃস্টে অনেক
কার্বন ফুট
প্রিন্টের সৃষ্টি হচ্ছে এবং স্টোন
ওয়াসের সময়
পাথর গুলো
ভেঙে যায়
, ভেঙে
যাওয়া পাথর
বর্জ্য পানির
সাথে মিশে
বাইরে বের
হয় এবং
জলাশয়ের দূষণ
ঘটায় ।সাম্প্রতিককালে ফ্যাঁকাসে
রঙের জিন্স
একটি জনপ্রিয়
পোশাক কিন্তু
এই জিন্স
গুলো তৈরির
সময় ডেনিমের
ও সিলিকার
ছোট ছোট
অংশ বাতাসে
মিশে যায়
, যার কাজকরা শ্রমিকদের ফুসফুসের
ক্যান্সার ঘটায় । যে পদ্ধতিতে
জিন্সের রঙ
ফ্যাঁকাসে করা হয় তাকে সানব্লাস্টিং
বলে,পরিবেশে
এর প্রভাবের
জন্য বিশ্বের
অনেক দেশে সানব্লাস্টিং কে নিষিদ্ধ
করা হলেও
বাংলাদেশ,চিন,মিশর,মেক্সিকো
তে এই পদ্ধতির
ব্যাবহার চলছে ।
ডেনিমের প্রধান
কাঁচামাল তুলা
আর তুলার
চাষ পৃথিবীর
সবচেয়ে দূষণকারী
চাষের একটি
, যাতে অনেক বেশি পরিমাণে পানির ব্যাবহার হয়
। হিসেব করে দেখা গেছে
প্রতি এক
জোড়া জিন্স
তৈরিতে যে
পরিমান তুলার
দরকার হয়
তার চাষে করতে তুলা ক্ষেতে প্রায়
১,৫০০
গ্যালন পানি
ব্যায়িত হয়
।সাথে সার ও কিটনাশকের
তো আছেই
।এতো ক্ষতিকারক দিক থাকা
সত্ত্বেও জিন্স
সবচেয়ে জনপ্রিয়
একটি পোশাক
এবং এর
ব্যাবহার কমার
উপলক্ষও নেই,প্রতিনিয়ত এর
চাহিদা ও
উৎপাদন বাড়ছে
। দ্রুত এর বিকল্প আবিষ্কারের তাগিত দিয়েছেন পরিবেশবাদীরা নয়তো তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন এই বলে যে “ভবিষ্যতে মানুষের যুদ্ধের কারন হবে ভুমির বদলে পানি।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন