তুলা ও পাট ফাইবার |
প্রকৃতিতে অনেক ধরনের ফাইবার পাওয়া গেলেও সব ফাইবার টেক্সটাইল ফাইবার নয় , কোন ফাইবার কে তখনই টেক্সটাইল ফাইবার বলা যায় যখন তার কিছু নির্দিষ্ট পরিমাণের স্থিতিস্থাপকতা,দৃঢ়তা ও দৈর্ঘ্য থাকে ।
টেক্সটাইল ফাইবারকে
প্রধানত দুইটি শ্রেনিতে ভাগ করা হয়
১। প্রাকৃতিক ফাইবার
২। ক্রিত্তিম ফাইবার
যে
সমস্ত ফাইবার সরাসরি প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত তাদের প্রাকৃতিক ফাইবার বলে । যেমন তুলা,সিল্ক ও ফ্লেক্স এর মত ফাইবার গুলো, যেগুলো এমনিতেই ফাইবারিয়াস ফর্মে প্রকৃতিতে বিরাজ করে ।
উৎসের ভিন্নতার ভিত্তিতে
প্রাকৃতিক ফাইবার কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়
(a) ভেজিটেবল ফাইবার :
বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক সেলুলোজ নির্মিত ফাইবার । এদেরকে ফাইবার ফর্মে
আনতে কোন কৃত্তিম প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন হয় না । গাছের বাকল,বীজ ইত্যাদি এই ফাইবারের উৎস ।
ভেজিটেবল ফাইবার আবার তিন
প্রকার
সিড ফাইবার : যেসব ফাইবারকে উদ্ভিদবীজের চারপাশের আশ থেকে সংগ্রহ করা হয় তাদের সিড ফাইবার বলে । যেমন তুলা
বাস্ট ফাইবার : যেসব
ফাইবার গাছের বাকল থেকে সংগৃহীত ।
সবচেয়ে প্রকৃষ্ট উদাহরন
পাঁট ।
লিফ ফাইবার : পাতা অথবা
গাছের গুড়ি থেকে যে ফাইবার পাওয়া যায় তাদের লিফ ফাইবার বলে । যেমন আনারশ,সিজাল ইত্যাদি ।
(b)এনিম্যাল ফাইবার : ব্যাবহারের
দিক দিয়ে প্রাকৃতিক ফাইবারের মধ্যে এটি দ্বিতীয় অবস্থানে । এনিম্যাল ফাইবারের
মধ্যে রয়েছে উল ও অন্যান্য আঁশ সমৃদ্ধ প্রোটিন ফাইবার । বেশীরভাগ প্রাণীজ প্রোটিন
নির্মিত অর্থাৎ যেসব ফাইবারে প্রোটিন মূল গাঠনিক একক হিসেবে কাজ করে ।
উল : উল ফাইবারের উৎস
ভেড়া জাতীয় লোমবিশিস্ট পশু ।
সিল্ক : সিল্ক কীটপতঙ্গ
থেকে প্রাপ্ত ফাইবার । রেশম গুটি থেকে সিল্ক পাওয়া যায় ।
সিল্ক প্রাকৃতিতেই ফিলামেন্টের আকারে থাকে এবং একে পরে স্পিন করা হয় ।
(c) মিনারেল ফাইবার : বিশেষ কিছু প্রয়োজনে ব্যাবহারের জন্য বিভিন্ন খনিজ আকরিক থেকে মিনারেল ফাইবারের সৃষ্টি।
যেমন এসবেস্টস ফাইবার ।
২। ক্রিত্তিম ফাইবার
: যে ফাইবার সরাসরি প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত নয় অথবা সম্পূর্ণরুপে
পরীক্ষাগারে নির্মিত তাদের ক্রিত্তিম ফাইবার বলে ।
ক্রিত্তিম ফাইবার দুই
প্রকারের হতে পারে
(a)প্রাকৃতিক পলিমার বা সেলুলোজিক
বা রিজেনেরেটেড পলিমার : যে সমস্ত ক্রিত্তিম ফাইবার তৈরিতে মুল উপাদান প্রকৃতি থেকে নেয়া হয় তাদের রিজেনেরেটেড ফাইবার বলে ।
উদ্ভিদজগৎ সেলুলোজের অফুরন্ত উৎস । যার অংশবিশেষ আমরা তুলা , পাঁটের মত ফাইবার হিসেবে পেয়ে থাকি যেখানে সেলুলোজ প্রকৃতিতেই ফাইবারের অবয়বে বিরাজ করে ।
কিন্তু বেশীরভাগ
সেলুলোজকে সরাসরি ফাইবার হিসেবে পাওয়া যায় না যেমন উদ্ভিদের কান্ত বাকল ও পাতার
মধ্যেও সেলুলোজ থাকে । এতে সেলুলোজ ফাইবার ফর্মে থাকলেও তা অন্য বিভিন্ন পদার্থে
পূর্ণ থাকে ।
বিগত শতাব্দীর মধ্যভাগে মানুষ এসব প্রাকৃতিক সেলুলোজকেও ফাইবারে পরিনত করতে সক্ষম হয় । যেমন
কৃত্তিম সিল্ক । প্রকৃতি যেখানে সেলুলোজকে ফাইবার ফর্ম দানে ব্যার্থ
তখন এগুলোকে ফাইবার তৈরির কাঁচামাল হিসেবে গ্রহন করা হয় ।
একইভাবে এনিম্যল প্রোটিন
কে ফাইবার তৈরির উৎস হিসেবে ব্যাবহার করা হয় । প্রাণীর দেহে প্রোটিন
গাঠনিক একক এবং একে ক্রিত্তিম ভাবে ফাইবারের ফর্ম দেয়া সম্ভব ।
রিজেনেরেটেড ফাইবার তিন
প্রকারের
ভিসকস রেয়ন
এসিটেড
এবং ট্রাই এসিটেড
(b) সিনথেটিক পলিমার বা নন
সেলুলোজিক : সে সব ফাইবার সম্পূর্ণরুপে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার দ্বারাই তৈরি করা হয়, যাতে প্রকৃতির কোন সম্পৃক্ততা থাকে না তাদের সিনথেটিক ফাইবার বলে ।
পূর্বের সেলুলোজের স্থলে এখানে থাকে কার্বন,হাইড্রজেনের মত জৈব মৌল ।
নাইলন ফাইবার |
আরও কিছু সিনথেটিক ফাইবার রয়েছে যেমন
রাবার : প্রাকৃতিক বা ক্রিত্তিম রাবার কে সংকুচিত করে ফাইবার ফর্মে আনা হয় ।
টালিক ফাইবার : মেটাল, মেটাল কোটেড প্ল্যাস্টিক বা মেটাল আবৃত ফাইবার সমতল,পিচ্ছিল ও ঝকঝকে ।
মিনারেল : ক্রিত্তিম ভাবে তৈরি যে সকল ফাইবারের সারাংশ খনিজ বা আকরিক থেকে প্রাপ্ত তাদেরকে মিনারেল ফাইবার বলে , যেমন গ্লাস,সিরামিক,গ্রাফাইট ফাইবার ইত্যাদি ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন