আসুন কিছু প্রশ্নের উত্তর খোজার চেষ্টা
করি ?
বাংলাদেশ তখন সবে মাত্র টেস্ট স্ট্যাটাস
পেয়েছে, টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগে বাংলাদেশ কেনিয়ার সাথে অনেকগুলো ম্যাচ খেলে , যাতে বাংলাদেশের
হারের সংখ্যাই ছিল বেশি , তারপরেও
বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পেল কেনিয়া পেল না । কেন ?
কারণ এর জন্য বাংলাদেশকে প্রমান করা দরকার ছিল , বাংলাদেশ ক্রিকেট ব্যবসার জন্য ভাল একটা জায়গা ।
কারণ এর জন্য বাংলাদেশকে প্রমান করা দরকার ছিল , বাংলাদেশ ক্রিকেট ব্যবসার জন্য ভাল একটা জায়গা ।
এ লক্ষে বাংলাদেশ কয়েকটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করে যেমন মিনি বিশ্বকাপ,পাকিস্থান শ্রীলংকার টেস্ট সিরিজ ইত্যাদি।কেনিয়া দল হিসেবে ভাল হলেও তাদের সরকার রাজনৈতিক ভাবে শক্তপোক্ত ছিল না ,ক্রিকেট নিয়ে অতিউৎসাহ দেখানোর ক্ষমতা ছিল না বিধায় টেস্ট স্ট্যাটাস আর পাওয়া হল না।
২০০৩ সালের বিশ্বকাপে পাইলটের নেতৃত্বে
বাংলাদেশের লজ্জাজনক পারফর্মেন্সে যখন বাংলাদেশ সব ম্যাচে হেরে গিয়ে গ্রুপ টেবিলের
শেষ স্থান দখল করে তখন কেনিয়া বাঘা বাঘা সব টিমের(নিউজিল্যান্ড,শ্রীলঙ্কা,বাংলাদেশ)সাথে জিতে সেগেন্ড রাউন্ডে ওঠে
।সেখানে জিম্বাবুয়ে কে হারায় এবং সেমিফাইনাল পর্যন্ত পৌছায় ।
স্টিক টিকোলো |
এর ভিত্তিতে কেনিয়াবাসী টেস্ট
স্ট্যাটাসের জন্য জোর দাবী তোলে।কিন্তু দাবী মানা তো
দুরের কথা বরং তারপর থেকে কেনিয়ার আন্তর্জাতিক টিমের সাথে খেলাই প্রায় বন্ধ হয়ে
যায়। যতটা স্বপ্ন নিয়ে কেনিয়া সেইবার
বিশ্বকাপে এসেছিল ঠিক সমান হতাশা নিয়ে বিশ্বকাপ ছেড়ে যেতে হয় ।
তারপরের ইতিহাসটা খুব করুন ।আন্তর্জাতিক ম্যাচে খেলার সুযোগ না পেয়ে টিমটার অবস্থা এখন এমনই যে আফগানিস্থান,আরব আমিরাত,কানাডা বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেলেও কেনিয়া পায় না।এককালে যেখানে ছিল স্টিক টিকলো,তন্ময় মিশ্রের মত উদীয়মান ক্রিকেটার এখন সেখানে ক্রিকেট প্রায় বন্ধের তালিকায় ।
পরের দৃষ্টিপাতে আসা যাক জিম্বাবুয়ের
দিকে
বাংলাদেশের আগেই তারা টেস্ট স্ট্যাটাস
পেয়েছিল ।
ভারত কে ভারতের মাঠেই নিয়মিত হারাত, বাংলাদেশের কথা নাই বা বল্লাম, তখন বাংলাদেশ বেশীরভাগ টেস্টেই ইনিংস পরাজয় ছিল একটা অতি সাধারণ ঘটনা।এন্ডি ফ্লাওয়ার,গ্রাণ্ড ফ্লাওয়ার,ঝাঁকড়া চুলের হেন্ড্রি অলংগার মত খ্যাতিমান ক্রিকেটার যিনি নিয়মিত টেন্ডুল্কারকে আউট করতেন,ডগ্লাস ম্যরেলিয়ার উইকেটের পেছন দিয়ে বাউন্ডারী হাঁকানো সিগনেচার শর্ট যে শর্টটি পরবর্তীতে আশরাফুলের শর্ট নামে পরিচিত হয়,হিট স্ট্রিক আরও কত প্লেয়ার যাদের নাম আজ ইতিহাস থেকে প্রায় হারিয়ে গেছে ।
এত সব প্লেয়ার থাকার পরেও কিভাবে একটা টীমের টেস্ট স্ট্যাটাস চলে যায় ?শুনেছি জিম্বাবুয়ে নাকি নিজে থেকেই টেস্ট স্ট্যাটাস প্রত্যাখ্যান করে, নিজের ভাল পাগলেও বোঝে, আর জিম্বাবুয়ে কেন বুঝবে না ?কোনভাবেই নিজে থেকে এরকম সিদ্ধান্ত কেউ নিতে পারে না,এসোসিয়েট দেশে গুলোর উপড় আইসিসির অনেক রকম প্রেশার থাকে । এটাও একটা প্রেশারের অংশ । জিম্বাবুয়ে এবারও বিশ্বকাপ খেলছে কিন্তু এখন আর সেই আগের মত ধাঁর নেই ব্যাটিং বোলিং ফিল্ডিং কোন পর্যায়েই। এর পেছনেও দায়ী নিয়োমিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলতে পারা ।
ডগ্লাস মেরেলিয়া |
মোহাম্মদ আশরাফুল |
ফ্লাওয়ার ভাতৃদয়,জিম্বাবুয়ে ক্রিকেটের স্বর্ণযুগ |
আইয়ারল্যান্ড , ইংল্যান্ডের এককালের
শত্রু দেশ ।ক্রিকেটের মান যথেষ্ট ভাল ২০০৭
এ পাকিস্থানকে ১৩৩ রানে অলআউট করে তাদের ফ্রন্টলাইটে আসার শুরু ও ১১ তে বিস্ময়কর পারফরম্যন্স
করা সত্ত্বেও তারা টেস্ট মর্যাদা পেল না,
আর পাবেও না কারণ ইংল্যান্ড কখনই তাদের টেস্ট স্ট্যাটাস দেয়ার
পক্ষে ভোট দেবে না এবং অন্যদেশগুলোকেও ভোট না দিতে প্রলুব্ধ করবে ।
ক্রিকেট এক সিজনের খেলা না এটা ১০-১২ বছরের খেলা । ফুটবলে হটাৎ করেই একটা দল ভাল করতে পারে কিন্তু ক্রিকেটে তা করতে হলে দরকার হয় অনেক বছর খেলার মধ্যে থাকা । একটা দল যত বেশি খেলবে সে ততটা এগিয়ে যাবে।যদি একটা টিমকে সুযোগই না দেয়া হয় ম্যাচ খেলার তাহলে তারা কিভাবে শুধু ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে বিশ্বক্রিকেটের স্রোতের সাথে তাল মেলাবে?
ক্রিকেট এক সিজনের খেলা না এটা ১০-১২ বছরের খেলা । ফুটবলে হটাৎ করেই একটা দল ভাল করতে পারে কিন্তু ক্রিকেটে তা করতে হলে দরকার হয় অনেক বছর খেলার মধ্যে থাকা । একটা দল যত বেশি খেলবে সে ততটা এগিয়ে যাবে।যদি একটা টিমকে সুযোগই না দেয়া হয় ম্যাচ খেলার তাহলে তারা কিভাবে শুধু ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে বিশ্বক্রিকেটের স্রোতের সাথে তাল মেলাবে?
ক্রিকেটে টেস্ট স্ট্যাটাস পেতে অর্ধেকের
বেশি টেস্ট খেলুরে দেশের সম্মতি ভোট লাগবে। বাংলাদেশ যখন টেস্ট মর্যাদা পায় তখন
কিন্তু ইংল্যান্ড,অস্ত্রেলিয়া,নিউজিল্যান্ড,সাউথ আফ্রিকার মত দেশগুলোর সম্মতি ছিল
না। প্রতিবেশি দেশ বলে ভারত,পাকিস্থান,শ্রীলঙ্কা,ওয়েস্টইন্ডিজ সমীহ করে সম্মতি দেয় ।এর
পেছনে রাজনৈতিক ও ব্যাবসায়িক বোঝাপড়াও ছিল ?
তাহলে কি বুঝলাম ? এখানে স্পষ্ট ভাষায় বলা হচ্ছে ক্রিকেট খেলার জন্য তোমার শুধু মাঠের পারফর্মেন্স থাকলেই চলবে না লাগবে ব্যাবসা,রাজনীতি, মানচিত্র ইত্যাদি ইত্যাদি।এখন এইরকম একটা সংকীর্ণ পরিবেশে যদি ক্রিকেট বেড়ে ওঠে তাহলে কেন তাতে ফিক্সিং,ঘুশ কেলেংকারি মত ঘটনা ঘটবে না। আজাইরাই নাম হইছে ভদ্র লোকের খেলা,বাস্তবে ধোঁকাবাজি ব্যাবসা ।
ক্রিকেট হয়েছে গন্ডিবদ্ধ, ভারতের কুক্ষিগত ।
আই পি এল তৈরি করে ভারতের সুবিধা আরও বেড়েছে,এখন আইসিসির ৮০ ভাগ ইনকামই আসে নাকি ভারত থেকে।এভাবে বিশ্বক্রিকেট যদি এতটা একটা দেশের কুক্ষিগত হয়ে পরে তাহলে কিভাবে আইসিসি নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করবে ?আজকে বাংলাদেশ হেরেছে বলে আমাদের মাথা চারা দিয়ে ওঠেছে , কারণ আমরা ক্রিকেটকে ভালোবাসি। আমাদের জাতির একতা নাম ক্রিকেট। সেই একতা যদি সাজানো নাটকের সমতুল্য হয় তাহলে সবচেয়ে কস্ট পাবে আমাদের ক্রিকেট পাগল জনতা, যেমন আজকে পেলাম।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন