১৯৮৮ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের কোন ইন্ডাস্ট্রির ওয়াশিং
সক্ষমতা ছিল না। তখন ওয়াসিং এর জন্য তৈরি গার্মেন্টসকে
হংকং এ পাঠানো হত। ওয়াশিং শেষে ফিনিশিং ও প্যাকেজিং এর
জন্য পুণরায় তাকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হত । এভাবে কাজ করতে ইন্ডাস্ট্রিগুলোর যেমন
অতিরিক্ত খরচ বহন করতে হত তেমনই পোশাকের মান নিয়ন্ত্রণে
সমস্যার সৃষ্টি হত ।কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশেই খুব সহজে ওয়াশিং করা সম্ভব হচ্ছে , গার্মেন্টস ওয়াশিং ম্যাশিন এখন বাংলাদেশে
আঞ্চলিক ভাবে তৈরি হচ্ছে ।
যেসব কারণে গার্মেন্টস ওয়াশিং করা হয়ঃ
পোশাক তৈরির সময় পদ্ধতিগত কিছু কারণে অনেকসময়
পোশাকের ত্বক কর্কশ হয়ে ওঠে।আর
সেসব পোশাক পরলে চামড়ায় ফোস্কা পরার সম্ভবনা থাকে,এই সমস্যা দূর করতে তথা তৈরি পোশাককে আরও মসৃণ করতে
গার্মেন্টস ওয়াশ করা প্রয়োজন।
তৈরির পর কাঙ্ক্ষিত পোশাকটি পূর্বে নির্ধারিত মাপের তুলনায়
কিছু ছোট বা বড় হতে পারে আবার পোশাকের বিভিন্ন অংশ সংকুচিত
অবস্থায় থেকে যেতে পারে। ফলে দেহের সাথে তা ঠিক ভাবে ফিট হয় না।সেক্ষেত্রে
গার্মেন্টস ওয়াস করে খুব সহজেই পোশাকের সঠিক আকার আকৃতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।তাছাড়া
প্রিন্টিং এর পরে পোশাকের গায়ে যদি কোনরূপ ময়লা,তেল বা চর্বি লেগে থাকে তাহলে ওয়াসিং এর দ্বারা সেগুলো দূর
করা সম্ভব।
গার্মেন্টস ওয়াশিং এর জন্য ওয়াশিং ম্যাশিন ছাড়াও নিচের
ম্যাশিন গুলোর প্রয়োজন হয়
১। গার্মেন্টস ডাইয়িং ম্যাশিন
২। হাইড্রো এক্সট্রাক্টর
৩। গার্মেন্টস ড্রাইয়ার
৪। বইলার
৫। স্যাম্পল ওয়াশিং ম্যাশিন
৬। ওয়াটার পাম্প ইত্যাদি
বিভিন্ন রকমের গার্মেন্টস
ওয়াশিং রয়েছে যেমনঃ
১। সাধারন
ওয়াশিং
২। পিগমেন্ট
ওয়াশিং
৩। ব্লিছ ওয়াশিং
৪। স্টোন ওয়াশিং
৫। এসিড ওয়াশিং
৬। এঞ্জাইম ওয়াশিং
৭। কস্টিক ওয়াশিং
৮। সুপার হোয়াইট ওয়াশিং
৯।স্যান্ড ব্লাস্টিং ও ওভার
ড্রাই(Dirty wash) ওয়াশিং
ওয়াশিং করার পদ্ধতি নির্ভর করে
কাপড়ের ধরন ও ক্রেতার চাহিদার উপড়ে।উদাহরণস্বরূপ ডেনিম কাপড়ের জন্য স্টোন ওয়াশকে
সবচেয়ে উপযুক্ত মানা হয় অন্যদিকে ণিটেড কাপড়ের জন্য লঘূ সফেনার ওয়াশ বেশি ব্যাবহার
হয়।
সাধারণ ওয়াশ মানে বোঝায় গরম পানির সাথে ডিটারজেন্ট ও সফেনার মিশিয়ে
গার্মেন্টস পোশাক কে ধৌত করা।তারপর একে পরিষ্কার পানি দ্বারা পুনরায় ধৌত করে
টাম্বেল ড্রাইয়ার দিয়ে ১০০ ভাগ শুকিয়ে ফেলা হয়।অধিক ওয়াশড লুক সৃষ্টির করতে এতে
কিছু সোডিয়াম যোগ করা যেতে পারে ।কাপড়ের ধরন এবং ওয়াশিং এর উদ্দেশ্য বিবেচনা করে
পানির তাপমাত্রা,ধৌত করার
সময়,ব্যাবহৃত সোডিয়াম ও ডিটারজেন্ট এর পরিমান ঠিক করা হয়।
এখানে ব্যাবহার হওয়া বিভিন্ন
ক্যামিক্যালের প্রভাব কাপড়ের উপড় ভিন্ন ভিন্ন। যেমন সফেনার কাপড়কে স্মুথ করে,ট্যাঁম্বেল ড্রাইং কাপড়কে মচমচে করে এবং গরম পানি,ডিটারজেন্ট ও সোডিয়াম কাপড়ের ভিতরের ইয়ার্ণের বন্ধন গুলো শক্ত করে
।কাপড়ে কোন ময়লা বা তেলের স্পট থাকলে সেগুলো এই ওয়াশিং ট্রিটমেন্টের ফলে দূর হয়ে
যায় ।
যে কাপড়কে ওয়াশ করা হবে সেটি
যদি পিগমেন্ট নির্মিত ডাই দিয়ে ডাই করা হয়ে থাকে তবে সে ওয়াশিং পদ্ধতিকে পিগমেন্ট ওয়াশ বলা হবে।পার্থক্য শুধু এটুকুই,তাছাড়া ওয়াশিং এর ধরন সাধারণ ওয়াশিং এর অনুরুপ।পিগমেন্ট
ওয়াশে যে পানি ব্যাবহার করা হয় তার তাপমাত্রা ৫০-৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হওয়া
বাঞ্ছনীয়।এছাড়া টাম্বেল ড্রাইয়ারে তার ধারণ ক্ষমতার ৭০ ভাগ ওজোনের ফেব্রিক চাপাতে
হবে যাতে করে ক্যামিক্যল গুলো আরও ভালভাবে ফেব্রিকের অভ্যন্তরে ঢুকতে পারে।
পরের পর্বে থাকবে স্টোন ওয়াশ,এসিড ওয়াশ কস্টিক ওয়াশ ,ওভার
ড্রাই ও সুপার হোয়ায়টেনিং ধাপ গুলো।
অনেক ভালো হইছে পোস্টটা।
উত্তরমুছুন