টেক্সটাইল প্রিন্টিং ওয়েট প্রোসেসিং টেকনোলোজির একটি অংশ যাকে ডাইং ও
তার পরবর্তী পর্যায়ে প্রয়োগ করা হয়।প্রিন্টিং এর মুখ্য উদ্দেশ্য হল রং এর ব্যাবহার
করে কিভাবে কাপড়কে আরও অধিক আকর্ষণীয় করে তোলা যায়।টেক্সটাইলের ভাষায় প্রিন্টিং
বলতে বোঝায় ডাই,পিগমেন্ট ও অন্যান্য রসায়নের ব্যাবহার করে ডিজাইন অনুযায়ী কাপড়কে
রঙিন করে তোলা।সঠিক ভাবে ডাই ও পিগমেন্টের ব্যাবহার নিশ্চিত করা গেলে প্রিন্টেড
ফেব্রিক শুধু আকর্ষণীয় হয় না সাথে ঘর্ষণ প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও লাভ করে।বিভিন্ন
মানুষের পোশাকের চাহিদা ও শৈল্পিকতার যেমন পার্থক্য রয়েছে তেমনি কিভাবে এবং কোন
নির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করে কাপড়ে রং করতে হবে তারও অনেক পার্থক্য রয়েছে, সাথে রয়েছে
ব্যাবহার্জ রসায়নের ধরণ। তাই প্রিন্টিং পদ্ধতির কৌশলগত অনেক রকমের ভিন্নতা
রয়েছে।সবচেয়ে আধুনিক কয়েকটি প্রিন্টিং কৌশল আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু।
1.Foil printing:
কোন টি-শার্টের গায়ে ঝলমলে স্পষ্ট কোন আইকোনিক বিবৃতি ফুটিয়ে তুলতে ফয়েল
প্রিন্টিং করা হয়।এ প্রিন্টিং এ কাগজের মত পাতলা কপার বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত
ব্যাবহার হয় যাকে ফয়েল বলে । উচ্চতাপীয় পরিবেশে ফয়েলকে ফেব্রিকের উপড়ে স্থাপন করার
মাধ্যমে প্রিন্টিং ক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
2.Water Based Gel
Printing:
কাপড়ের উপড় (Gel) জেল কালির
ডিজাইন খুব চাকচিক্যময় ও আর্দ মনে হয় । এই প্রিন্ট করা পোশাকের ডিজাইনে
ত্রিমাত্রিক প্রভাব লক্ষ্যনীয়।
3.High Density
Printing:
High Density প্রিন্টিং এর আলাদা কিছু বৈশিষ্ট
রয়েছে ।বিশেষ ফরমুলায় তৈরি কালী ও স্টেনসিলের সাহায্যে কাপড়ে এ প্রিন্টিং করা হয়।
স্টেনসিল হচ্ছে প্লাস্টিক বা ধাতুর তৈরি
পাতলা কার্ড যাতে নির্দিষ্ট ডিজাইনের অংশে অংশে ফাকা স্থান থাকে, যে ফাকা স্থান দিয়ে রং ও পিগমেন্ট কাপড়কে স্পর্শ করে কাপড়ে ডিজাইন তৈরি
করে।
4.Suede Printing বা Leather Effect Print:
একে শুধু প্রিন্টিং বললে ভুল হবে বরং এটি একটি সম্পূর্ণ
ফিনিশিং প্রক্রিয়া । Suede printing এর প্রভাবে কাপড়ে
চামড়ার মত অনুভবের সৃষ্টি হয়। তাই এসমস্ত পোশাককে Suede Leather নির্মিত পোশাক নাম দেয়া হয়েছে।
5.Glitter Printing:
গ্লিটার একটি ট্রান্সফার প্রিন্টিং যেখানে ফেব্রিকের
উপড়ে দানাদার Glitter, রং প্রদর্শন করে। বিশেষভাবে তৈরি করা
গ্লিটার পাঊডার এ প্রিন্টিং এর মূল উপাদান। ডেকোরেটিভ আপহোলস্টারি ডিজাইনের জন্য
গ্লিটার প্রিন্টিং সবচেয়ে উপযোগী।
গ্লিটার পেস্টের রেসিপিঃ
Rubber paste - 70%
Fixer – 2%
Glitter – 28%
6.Embossed
Printing:
Embossing এমন একটি প্রিন্টিং প্রক্রিয়া যাতে পিতল,ম্যাগনেসিয়ামের ডাই কে এমন ভাবে কাপড়ের গাঁয়ে স্থাপন করা হয় যাতে
ডিজাইনের অংশগুলো ফেব্রিক উপড়ে বেশ খালিকটা পুরুত্ত নিয়ে ভেসে থাকে এবং ডিজাইনটিকে
ত্রিমাত্রিক বলে মনে হয়।
7.Fluorescent
Printing:
এ প্রিন্টিং পদ্ধতির দুটি উপকরণ হল ফ্লুরেসেন্ট কালি
এবং ছোট আকারের প্রিন্টার । ফ্লুরেসেন্ট
কালী উজ্জ্বল বর্ণের রঙের জন্য দায়ী কিছু বিশেষ শক্তিশালী পিগমেন্ট ধারণ করে যা
তেজস্ক্রিয় পদার্থের মতই ফেব্রিকের গায়ে ভেসে ওঠে। ফ্লুরেসেন্ট প্রিন্টিং কাপড়ে বিভিন্ন দাগের
ন্যায় রেখার সমাবেশ ঘটিয়ে নির্দিষ্ট ডিজাইন সৃষ্টি করে সহজেই সকলের দৃষ্টি কাড়তে
সক্ষম ।
8.Metallic Printing:
মেটালিক কালি সাধারণ কালি থেকে চারগুন বেশি পিগমেন্ট
বহন করে এজন্য কালীর ঘনত্ব বেশি থাকে । এজন্য রিটারডিং এজেন্টের ব্যাবহার
বাধ্যতামূলক। কেননা প্রিন্টিং কে স্থায়ী করতে কালীর ঘনত্ব কমানো প্রয়োজন।রিটারড়িং
এজেন্ট কালীর সকল অংশে পিগমেন্টের পরিমান সমান রেখে কালিকে ঘন থেকে পাতলা দ্রবণে
পরিনত করে। পানি যোগ করে ঘনত্ব কমানোর
প্রয়াস করলে কালীর ভিতরের পিগমেন্টের ঘনত্বও কমে যায় যা প্রিন্টিং এর জন্য বিরূপ
প্রভাব ফেলে। মেটালিক প্রিন্টিং এর দ্রবণে থাকে সনা,তামা,ব্রোঞ্জ,অ্যালুমিনিয়াম এর পাউডার এবং লম্বা
গঠনাকৃতির পলিমেরিক যৌগ বাইন্ডার যেটি
এদের মধ্যে আঠালো মিশ্রণ তৈরি করতে সাহায্য করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন