স্বাগতম

মোদের গরব, মোদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা |পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাভাষী মানুষের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই!

অ্যালকোহলিক পানীয় বিয়ার,ওয়াইন থেকে ফেব্রিক এবং ফার্মেন্টেড ফ্যাশন(Fabric Made of Alcoholic Drinks & Farmented Fashion )



টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল হিসেবে আজ অবধি আমরা অনেক কিছু থেকেই ফেব্রিক পেয়েছি যেমন বাঁশ,ক্যালভার,দুধ,বিভিন্ন কঠিন ধাতু,বোরন কার্বাইড আরও কত কি , সবগুলো বলতে গেলে তালিকা অনেক লম্বা হয়ে যাবে। আর এই তালিকায় আরও একটি নতুন নাম যুক্ত হল  জনপ্রিয় পানীয় বিয়ার।


হ্যাঁ আমরা যখন তুলা ,সিল্ক বা উলের পোশাক নিয়েই সন্তুষ্ট তখন অস্ট্রেলিয়ার পার্থ অঙ্গরাজ্যের উৎসাহী কিছু ব্যাবসায়ী বিয়ার থেকে বাণিজ্যিকভাবে ফেব্রিক উৎপাদনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
দীর্ঘ ৮ বছর গবেষণার পর বিজ্ঞানী গ্যারি কাস এবং চিত্রশিল্পী ডোনা ফ্রাঙ্কলিন তাদের যৌথ প্রচেষ্টায় ফার্মেন্টেশন করা বিয়ার থেকে সফল ভাবে পোশাক বানিয়ে দেখিয়েছেন । সমস্ত গবেষণার কাজটি পরিচালনা করা হয় পার্থ প্রদেশের ছোট্ট শহরতলী নলমারাতে ।


প্রথমে বিয়ার কে ভ্যাট ডাইয়ের মধ্যে রাখা হয় এবং তাতে বিশেষ প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া যোগ করা হয়। একে  অ্যাসিটো ব্যাকটেরিয়া বলে। ব্যাকটেরিয়া যোগে ভ্যাট ডাইয়ের দ্রবণটি ভিনেগারের মত কিছু একটাতে পরিবর্তিত হয়,যার মধ্যে রিয়ার বিক্রিয়া করে ফেব্রিক তৈরির ঘন দ্রবণ উৎপন্ন করে যা রাসায়নিকভাবে তুলার মত ফেব্রিক দিতে সক্ষম।

Gary Cass & Donna Franklin

প্রাথমিকভাবে তারা শুধু মহিলা পোশাক ও সুইমওয়ারে এ ফেব্রিককে  ব্যাবহার করতে পেরেছেন, কিন্তু তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন যে ভবিষ্যতে সব ধরণের পোশাকেই এই ফেব্রিক ব্যাবহার করা সম্ভব হবে।  তবে এ ফেব্রিকে কোনরুপ সেলাই করা যায় না।সেলাই ছাড়াই সম্পূর্ণ পোশাকটি তৈরি করতে হয়। এ লক্ষে মানুষের দেহের আদর্শ মাপ বিশিষ্ট নকল মূর্তি(ডামি) ব্যাবহার করা হয়। অন্যান্য সাধারণ ফেব্রিক নির্মিত তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে পোশাক তৈরি হবার পর তার মাপজোঁক ঠিক আছে কিনা যাচাইয়ে ডামি ব্যাবহার করা হলেও এখানে মুলত স্পিনিং এর কাজ করতেই ডামি ব্যাবহার করা হচ্ছে। ফেব্রিক তৈরির ঘন দ্রবণটিকে মেল্ট স্পিনিং করার পরিবর্তে ডামির গায়ে বিছিয়ে দেয়া হয়।


ডামি তে বিছানো অবস্থায় ঘন দ্রবণ

ডামির গায়ে বিছিয়ে তাকে শুকানোর ব্যাবস্থা করা হয়।শুকানোর পর সেটি অনেকটা টিস্যু পেপারের মতই হয়ে ওঠে।যেন সহজে ছিঁড়ে না যায় তার জন্য পরিধান করার সময় একে কিছুটা ভিজিয়ে রাখতে হয়।


২০০৭ এ সর্বপ্রথম অনেকটা আকস্মিক ভাবেই ঐ দুজন ফেব্রিক তৈরিতে অ্যালকোহল ব্যাবহারের পরিকল্পনা করেন এবং সফল ভাবে (Wine) ওয়াইন থেকে ফেব্রিক তৈরি করতে সমর্থ হন।এই সফলতা তাদের অনুপ্রাণিত করে আরও নতুন কিছু উদ্ভাবনে । ২০১৪ তে তারা সফল ভাবে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বিয়ার থেকে কাপড় তৈরি করতে সক্ষম হলেন।এবং তারা জানিয়েছেন বিয়ার ও ওয়াইন তৈরি কারখানায় যে বর্জ্য নিষ্কাশিত হয় সেগুলোকে ব্যাবহার করেই এই ফেব্রিক তৈরি করা সম্ভব। 


এই বিশেষ অ্যাসিটো ব্যাকটেরিয়ার সাহায্যে গাঁজন করে তৈরি করা কাপড় গুলোকে সম্প্রতি ফার্মেন্টেড ফ্যাশন নামে ডাকা হচ্ছে। এ ফেব্রিক গুলোকে শুধু মাত্র তৈরি পোশাকেই সীমাবদ্ধ রাখা হচ্ছে না, ঔষধ শিল্পে,দাতের চিকিৎসায়,স্থাপত্যকলায় ব্যাবহারের চেস্টা চলছে।রেড ওয়াইনের মত পানীয় গুলোকেও এ তালিকায় যোগ করার চেষ্টা চলছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 

দর্শক সংখ্যা

বিজ্ঞাপন

যোগাযোগ Amitptec6th@gmail.com

সতর্কবার্তা

বিনা অনুমতিতে টেক্সটাইল ম্যানিয়ার - কন্টেন্ট ব্যাবহার করা আইনগত অপরাধ,যেকোন ধরণের কপি পেস্ট কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং কপিরাইট আইনে বিচারযোগ্য !