মানব দেহের উপড় পারিপার্শ্বিক
আবহাওয়ার তাপমাত্রার ও বায়ুর তাপীয় অবস্থার বিস্তর প্রভাব বিরাজমান। প্রতিকূল পরিবেশে
জীবনধারণের জন্য পোশাক নির্মাণ করতে মানব দেহের তাপীয় ধারনক্ষমতা এবং ঠান্ডা ও গরম
বায়ুর গতিবেগ সম্পর্কে বিস্তারিত তত্থ্য প্রয়োজন । এ সম্পর্কে অ্যামেরিকান আর্মি রিসার্স
ইন্সটিটিউট অফ ইনভাইরন্টমেন্ট মেডিসিন পরিচালিত গবেষণায় উঠে আসা তথ্যাদির ভিত্তিতে
কিভাবে আরও উন্নত ধরনের তাপসহনীয় বস্ত্র তৈরি করা যেতে পারে তা নিয়ে আলোকপাত করা হল
।
৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার বাতাসকে গরম বলা হয়
২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায়
আরামদায়ক বাতাস
২২ ডিগ্রী সেলসিয়াস
তাপমাত্রায় শীতল বাতাস
১৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায়
বেশি শীতল বাতাস
১০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় বাতাসকে ঠাণ্ডা বাতাস বলা হয়
০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় তিক্তময় ঠাণ্ডা
-৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় হিমায়িত ঠান্ডা
-২৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার বাতাসে মাত্র এক মিনিটের মধ্যে মানব দেহ হিমায়িত অবস্থায় পরিনত হয়
এবং -৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রার বাতাসের মানব দেহ হিমায়িত করতে সময় লাগবে মাত্র ৩০ সেগেন্ড
বাতাস কতটা ঠাণ্ডা
তা নির্ভর করে সে বাতাসের তাপমাত্রা ও গতিবেগের উপড় । শীতল জলবায়ুর দেশে বসবাসের একটা বড় সমস্যা হল
এই ঠাণ্ডা বাতাস । যা মানব দেহের অভ্যন্তরীণ তাপের ৮০% পর্যন্ত কমিয়ে ফেলতে সক্ষম
। যে একক বা মানদণ্ডের ভিত্তিতে মানব দেহের উপড় ঠান্ডা বাতাসের প্রভাব পর্যবেক্ষণ
করা হয় তাকে ওয়াইন্ড
চিলি ফ্যাক্টর (Wind Chill Factor) বলে ।
H = ( 10.45+ √ v - v ) ( 33-T a )
যেখানে
H= ওয়াইন্ড চিলি ফ্যাক্টর (Wind Chill Factor)
V= বাতাসের বেগ
T a = বাতাসের তাপমাত্রা
সাধারন অবস্থায় মানুষের দেহের তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রী
সেলসিয়াস । ওয়াইন্ড
চিলি ফ্যাক্টর (Wind Chill Factor) এর মান যখন ১০০০, তখন কোন ব্যাক্তি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ঠান্ডা অনুভব করতে শুরু করবেন । এই মান ১৪০০ এ পৌঁছালে মাত্র বিশ মিনিটের মধ্যে মানব দেহ
হিমায়িত হতে শুরু করবে ,আর ১৮০০ এ পৌঁছালে
হিমায়িত হতে লাগবে মাত্র ১০ মিনিট ।
ফাইবার
|
তাপ পরিবাহিতা
|
তুলা
|
৭১
|
উল
|
৫৪
|
সিল্ক
|
৫০
|
পি ভি সি
|
১৬০
|
সেলুলোজ অ্যাসিটেড
|
২৩০
|
নাইলন
|
২৫০
|
পলিএস্টার
|
১৪০
|
পলিইথিলিন
পলিপ্রপিলিন
বায়ু
|
৩৪০
১২০
২৫
|
উপড়ে তাপপরিবাহিতার টেবিল থেকে দেখা যাচ্ছে টেক্সটাইল ফাইবার বাতাসের তুলনায় অনেক বেশি তাপ পরিবাহী । পারতপক্ষে শুধু বাতাসই একটি আদর্শ তাপ অপরিবাহী পদার্থ । যদি তাই হয় তাহলে খালি গায়ে থাকলেই তো সবচেয়ে বেশি গরম লাগার কথা, কেননা বাতাস সবচেয়ে কম তাপ পরিবহন করে । কিন্তু বাস্তবে টেক্সটাইল ফাইবার দিয়েই অপরিবাহী গরম কাপড় তৈরি হচ্ছে । কিন্তু কিভাবে ?
তন্তুময় ফাইবার মানেই তাদের অভ্যন্তরে বিশালাকার ফাকা অংশ থাকে যা বায়ুকে
আঁটকে রাখতে সক্ষম । আর ঐ বায়ুই তন্তুময় ফাইবারের ফেব্রিককে তাপ পরিবাহী ক্ষমতা
কমিয়ে দেয় । কারণ দেহের কাছাকাছি অংশের পরিবাহী ফাইবার দেহ থেকে তাপ শোষণ করলেও
মাঝখানে বায়ুর পরিমান বেশি থাকায় সে তাপকে তার পার্শ্ববর্তী ফাইবারে পরিবহন করে
নিয়ে যেতে পারে না বিধায় দেহের তাপ দেহেই জমা থেকে যায় । সে
কারনে সাধারণ পোশাকে ব্যাবহৃত ফেব্রিকের ৭৫% আয়তন বায়ু দ্বারা পূর্ণ থাকে,কম্বলের
কাপড়ে বায়ুর পরিমান ৯০% অন্যদিকে পশমি
কাপরের পোশাকে ফাইবারের পরিমান মাত্র ৫% ,বাকী
৯৫% অংশ আয়তনেই থাকে বায়ু । অর্থাৎ যে পোশাকের ভিতরে বায়ুময় অংশ যত বেশি সে পোশাক তত বেশি তাপ অপরিবাহী অর্থাৎ গরম ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন