প্রায়
সকল প্রকার জুতার সাথে
মোজা পরা হয়। প্রাচীনকালে মোজা তৈরি হত চামড়া ও জটপাকানো পশুর লোম থেকে। এখনকার প্রচলিত মোজাগুলো তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন প্রকার প্রাকৃতিক ও
কৃত্তিম ফাইবারের সমন্বয়ে। বিশেষত নিটেড কাপড় থেকে।প্রাচীন কালের মানুষ হাতে
তৈরি মোজা ব্যাবহার করত। ষষ্টদশ শতাব্দীর শেষ দিকে ম্যাশিন ব্যাবহার করে মোজা তৈরি শুরু হয়।
মোজার
অন্যতম প্রধান কাজ কিন্তু
ঘাম শোষণ করা। পায়ের পাতা মানব দেহের কয়েকটি বিশেষ ঘামপ্রবণ অংশের মধ্যে একটি।
গরম আবহাওয়াতে প্রতিদিন পায়ের পাতা থেকে ০.২৫ ইউ এস পিন্ট বা ০.১২ লিটার ঘাম নির্গমন হয়। মোজাকে তাই অবশ্যই এমন কাপড় দিয়ে তৈরি করতে
হয় যার ঘাম শুষে নেয়ার ক্ষমতা অনেক বেশি।
শিতকালে ব্যাবহারের মোজায় উলের ব্যাবহার বেশি।
কারন উলের তাপ পরিবাহীতা কম। পায়ের
তাপ
ধরে
রেখে ঠাণ্ডায় উষ্ণায়নের কাজ করে উল। খেলার সময় জুতার সাথে যে মোজা ব্যাবহার করা হয় সেগুলো হয় সাদা রঙের ও অপেক্ষাকৃত ভারী, ফরমাল পোশাকের সাথে কাল রঙের মোজাই ভাল মানায়। তবে এখন অনেক রঙের মোজার প্রচলন হয়েছে।
মোজা
ব্যাবহারের প্রাচীন নিদর্শন ঘেটে দেখা গেছে পূর্বে মোজা তৈরিতে পশুর চামড়ার ব্যাবহার ছিল মুখ্য।পুর্বে মানুষ মোজা ব্যাবহার করত পায়ের গোড়ালির চারিদিকে। ধারণা করা হয়
খ্রিষ্টপূর্ব ৮০০ অব্দের সময়কালে প্রাচীন গ্রীসে ঠান্ডা নিবারণের উদ্দেশ্যে প্রথম মোজার ব্যাবহার শুরু হয়।তখন পশুর চামড়া ও পশম দিয়ে তারা মোজা তৈরি করত। রোমান জাতী মোজায় প্রথম তাঁতের কাপড়ের ব্যাবহার করে । ৫ম খ্রিষ্টাব্দে ইউরোপের ধর্মযাজকেরা পবিত্রতার প্রতীক
হিসেবে
মোজা
পরিধান করত। তারা একে পুঁতিস নামে সম্বোধন করত। তখনকার সময় ও তারও অনেক কাল পর পর্যন্ত মোজা ব্যাবহার করত শুধুই
সমাজের আভিজাত শ্রেণীর মানুষেরা ।
১৯৩৮
সালে নাইলন আবিষ্কার হওয়ার পর মোজার ইতিহাসে বড় পরিবর্তন আসে। তার আগ পর্যন্ত মোজা
তৈরি হত সিল্ক , তূলা আর উল থেকে।তবে বর্তমানে বেশিরভাগ মোজায় ব্যাবহার হচ্ছে অ্যক্রিলিক,স্পান্ডেক্স,নাইলনের মত কৃত্তিম ফাইবার। সাথে তুলা ও উলের ব্লেন্ডিং
ঘটানো
হচ্ছে।
কারণ ব্লেন্ডিং করা কাপড়ের স্থিতিস্থাপকতা ও বায়ু চলাচলের উপযোগিতা বেশি।
চীনের
ঝেজিয়াং প্রদেশের ঝূজি শহর মোজার শহর নামে বিখ্যাত। কারণ প্রতি বছরে এই একটি শহরে আটশ কোটি জোড়া মোজা তৈরি হয়। বলা যায় এ শহর পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে
দুই জোড়া করে মোজা দিতে সক্ষম।
এবার
আসি মোজা বাজারের আলোচনায় ,মোজা বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে শিশু ও কিশোর বয়সী ক্রেতারা।ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মোজায় ফ্যাশনের ছোঁয়া বেশি। দৈর্ঘ্যের মাপকাঠিতে মেয়েদের মোজা-কে তিন শ্রেণীতে ভাগ করা হয় ১) অ্যাঙ্কল
২)ক্রিউ ৩)নি ।
Crew socks |
Ankle socks |
পায়ের পেশী পর্যন্ত টানা মোজার
প্রচলন বৃদ্ধি পায় স্কার্টের সাথে পায়ের অনাবৃত অংশকে আবৃত করে রাখার প্রয়োজনীয়তা
থেকে।মেয়েরা মোজা পছন্দ করে থাকে শার্ট,প্যান্ট , শুট ও জুতার সাথে মিল রেখে। এককালে
মাঙ্কি মোজা খুব জনপ্রিয় হয়েছিল। মাঙ্কি মোজার গোড়ালির অংশ লাল,পায়ের পাতার অংশ বেগুনি অথবা বাদামী এবং উপড়ের অংশ সাদা রঙের হত ।
সবসময় ব্যাবহার করার জন্য টিউব
মোজা সবচেয়ে সুবিধাজনত, এ মোজাতে
নির্দিষ্টভাবে গোড়ালির কোন প্রসারিত স্থান দেয়া থাকে না । ছোট ও বড় উভয় পায়ের
ব্যাক্তি একই সাইজের মোজা ব্যাবহার করতে পারেন। টিউব মোজা সাধারণ মোজার থেকে
সস্তা।
স্যান্ডেলের সাথে পরার জন্য হালকা ওজোনের র্যাগড মোজা ভাল। শিতের মৌসুমে পরার জন্য
এটি তৈরি করা হয়। বরফে ঢাকা অঞ্চলের মানুষের জন্য রয়েছে
পোলার ফ্লিচ মোজা।পোলার ফ্লিচ মোজা ভেজা অবস্থাতেও পায়ের উষ্ণতা বজায়
রাখতে সক্ষম ।
knee socks |
Tube socks |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন