ঐতিহ্যগত ভাবে বাংলাদেশ পোশাকের জন্য বিখ্যাত।
বহুকাল থেকে যে প্রথাগত পোশাক এদেশের মানুষের পরনে শোভা পাচ্ছে , আধুনিক যুগে এসেও
তা অনেক সমৃদ্ধ , অনেক ফ্যাশনেবল । বাংলাদেশী পোশাককে সেকেলে
বলাটা অপ্রাসঙ্গিক। কেননা চাহিদা আছে বলেই , বড় বড় সুপার মার্কেটগুলোতে এমন অনেক
দোকান তৈরি হয়েছে যেখানে শুধুই দেশিই পোশাক বিক্রি হচ্ছে।
দেশি পোশাকের মধ্যে সব থেকে জনপ্রিয় হল পাঞ্জাবী, কোর্তা ও শেরওয়ানী এবং মেয়েদের শারি,শালোয়ার কামিজ, লাহেঙ্গা ইত্যাদি। কিছু ফিউশন টাইপের পোশাক বের হয়েছে দেশীয় কাপড় ও ডিজাইনের সাথে পশ্চিমা বাহ্যরুপ যোগ করে।
বাংলাদেশের তৈরি শার্ট ও
জ্যাকেটগুলো তরুণ প্রজন্মের কাছে এখন তুমুল জনপ্রিয় । শিতের জ্যাকেট পরার রীতি
বাংলাদেশী ফ্যশনে থেকেই উৎসারিত। যদিও এটা নতুন নয় কারন এদেশের মানুষের কাপড়
চোপড়ের মধ্যে জ্যাকেট আগে থেকেই ছিল । শুধু পুরুষ নয়, মহিলাদের সালোয়ার ও
লাহেঙ্গার সাথে জ্যাকেট পরার চল অনেক আগের।
আশ্চর্যের বিষয় হল, জ্যাকেটের
ব্যাবহার এখন এতো বৃদ্ধি পেয়েছে যে , কোর্তা ও শার্টের মতই একটা পোশাক হিসেবে একে
গন্য করা হচ্ছে , যা পূর্বে ছিল না। জ্যাকেট কে সেই পোশাক মনে করা হয় যা কিনা
বাংলাদেশের পোশাকের সাথে পশ্চিমা পোশাকের একটা সেতুবন্ধন তৈরি করেছে।
ছেলেদের পোশাকের রুচি কোনভাবেই
শুধু বাংলাদেশী পোশাকে মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই বরং তারা খুব সচেতনভাবেই সুট , টি-
শার্টের মত পশ্চিমা পোশাকের সাথে নিজেদের মানিয়ে নিয়েছে। পশ্চিমা সংস্কৃতিতে নতুন
কি কি পোশাক আসছে তারও খবর রাখছে । নির্দিষ্ট
ধারার পশ্চিমা পোশাকগুলো খুব সহজেই কারো ব্যাক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলে ,পাশাপাশি
বিভিন্ন বক্তব্য , বার্তা ও ডিজাইন প্রকাশ করে। সর্বশেষ আসা টি-শার্ট গুলোতে
ফটোগ্রাফিক প্রিন্টিং এর ব্যাবহার করা হয়েছে।
বাংলাদেশে উৎপাদিত কাপড় থেকে
তৈরি টি-শার্ট গুলো ছোট কোর্তার মত দেশীয় আটপৌরে পোশাকের শ্রেণীতে পরে। জিন্স
প্যান্ট বা ট্রাউজারের সাথে টি-শার্ট পরা যায়।পশ্চিমা পোশাকের সুবিধা অনেক বেশি।তাই
অনেক বিষয়ে দেশীয় পোশাককে পিছিয়ে থাকতেই হয়।
কিন্তু তা সত্বেও বাংলাদেশের
ঐতিহ্যবাহী বিবাহ পোশাক খুব দামী পোশাক হিসেবে গন্য হয় । বাংলাদেশের জাতিগত বিবাহ
পোশাকগুলো খুব প্রাচুর্যের ও উৎকৃষ্ট মানের । একজন মহিলার পরনে চিকণ শাড়ি, সালোয়ার
কামিজ অথবা লাহেঙ্গার সাথে ম্যাচিং করা অলঙ্কার সামাজিক প্রেক্ষাপটে সবচেয়ে
রুচিশীল পোশাক। শেরয়ানি,পাঞ্জাবী,মাথার পাগ্রী অনেক ছেলেরই পছন্দের পোশাক । কিছু
অঞ্চলের পুরুষেরা ঐতিহ্যগতভাবে অলঙ্কার পরিধান করে ।
শেরওয়ানী আধুনিক ও প্রথাগত দুই
ধারার সাথেই খুব সাবলীলভাবে মানিয়ে যায়। এমব্রয়ডারি করা শেরওয়ানী এখন বেশি চলছে। আবার বিভিন্ন
ডিজাইনের স্বর্ণমুদ্রা বা খনিজ পদার্থের গুটিকা বসানো শেরওয়ানি অভিজাত্যের প্রতীক।
উৎসব পার্বণ ও বিবাহোৎসবে
বাংলাদেশের পোশাক বিশ্বের অন্যতম রুচিশীল পোশাকরীতির একটি । দিন দিন ফ্যাশন
জ্ঞানের ভিত্তি ও চহিদা আগের যেকোন সময়ে তুলনায় অনেক বেশি গতিতে প্রসারিত হচ্ছে।
এই বর্ধিষ্ণু ফ্যাশন ক্ষুধা মেটাতে ফ্যাশন হাউজগুলোকে তাই খুব সচেতনতার সাথে নতুন
ধারার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হচ্ছে, এবং তাদের পোশাকের লাইনগুলোতে প্রতিনিয়ত
পরিবর্তন আনতে হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন