আবহাওয়ার উপড় মানুষের স্বাস্থ্য
ও ভাল থাকা গভীরভাবে নির্ভরশীল । প্রত্যক্ষ
করা গেছে নিউমোনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা,ব্রংকাইটিজ ইত্যাদির রোগের প্রাদুর্ভাবের
ও জন্মহার পরিবর্তনের উপড় কোন অঞ্চলের আবহাওয়া তথা জলবায়ুর একটা বিশাল প্রভাব রয়েছে ।
রাডার শব্দটিকে ভাঙলে পাওয়া যায়
RADAR.যার পূর্ণ অর্থ Radio
Detecting And Ranging অর্থাৎ যে যন্ত্র রেডিও তরঙ্গর শনাক্ত ও
বিন্যাস করে । নাম যা ইঙ্গিত করে রাডারের কাজ ঠিক
তাই,অর্থাৎ রাডার কাজ করে প্রধানত রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে ।
রাডার তারবিহীন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক
এবং মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কের মতই তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গ পাঠায় । ছোট ছোট পালসের আকারে পাঠানো সংকেত দূরবর্তী কোন বস্তুতে
প্রতিফলিত হয়ে পুনরায় রাডারে ফিরে এলে, আংশিক কিছু শক্তি রাডারে
অবক্ষিপ্ত হয় ।
ঘটনাটি ঠিক শব্দের প্রতিধ্বনি শোনার
মতই । যদি আমরা কখনো কুয়োর মুখে চিৎকার করি, তাহলে বদ্ধ কুয়োর পানির তলে সে শব্দের প্রতিফলন প্রতিধ্বনির রূপে আমাদের কানে ফিরে আসে
। ঠিক একই ভাবে তড়িৎ চৌম্বুক তরঙ্গ সংকেতের পালস বৃষ্টির কনায় ধাক্কা
খেয়ে রাডারে ফিরে আসবে। এই ফিরে আসা তরঙ্গ
থেকে রাডার বলে দেবে কোথায় বৃষ্টি
হয়েছে এবং কতটুকু বৃষ্টি হয়েছে ।
আসুন দেখা যাক একটি রাডারের কি
কি অংশ নিয়ে গঠিত হয়
১। একটি ট্রান্সমিটার বা প্রেরকযন্ত্র , এটি শক্তির পালস তৈরি করে ।
২। একটি ট্রান্সমিটার সুইচ বা গ্রাহক বোতাম , এই অংশটি এন্টেনা কে বলে দেয় কখন শক্তি প্রেরন করতে হবে এবং কখন
পালসগুলোকে গ্রহণ করতে হবে ।
৩। এন্টেনা, যা পালসগুলোকে পরিবেশে পাঠায় এবং প্রতিফলিত
পালস কে গ্রহণ করে ।
৪। একটি গ্রাহক যন্ত্র , যা
কিনা গৃহীত সংকেত এর উপস্থিতি বা অস্তিত্বকে সনাক্ত করে । গ্রাহক যন্ত্র এ পর্যায়ে
সংকেত কে ভিডিও ফরম্যাট এ রূপান্তরিত করে ।
এভাবে গৃহীত সংকেতগুলো একটি ডিস্প্লের মধ্যে
প্রদর্শিত হবে ।
রাডারের চিত্র |
রাডার থেকে পাওয়া তথ্যের ধরণ
সাধারণত দুই ফর্মের এক প্রতিবিম্বন আরেকটি বেগমাত্রিক ।
একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কতটুকু বৃষ্টিপাত
হয়েছে তা প্রতিবম্মবন থেকে পাওয়া তথ্য নির্দেশ করে, অপরদিকে বৃষ্টিপাতের গতিবেগ ও গতির দিক পরিমাপ করে বেগমাত্রিক ফর্মের
তথ্য । বেশীরভাগ রাডার প্রতিবিম্বন পরিমাপ করতে পারলেও গতিবেগ পরিমাপ করতে অবশ্যই ড্রপলার রাডারের
প্রয়োজন ।
রাডারের কাজের পেছনের বিজ্ঞানঃ
প্রতিবিম্বন বা রিফ্লেক্টিভিটিঃ
রাডার কাজ করে পদার্থ বিজ্ঞানের
তরঙ্গ তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে । জার্মান বিজ্ঞানী Heinrich tertz ১৮৮৭ সালে রেডিও তরঙ্গের বৈশিষ্ট বা চরিত্র নিয়ে গবেষণা করেন
। তিনি দেখান , কোন অদৃশ্যমান তড়িৎ চৌম্বুক তরঙ্গ তার অনুকূল কোন
বৈদ্যুতিক বর্তনী থেকে বিকিরিত বা বিচ্ছুরিত হলে আলোর গতি অর্জন
করবে এবং ভ্রমণ পথে একই ভাবে প্রতিফলিত হয়ে চলতে থাকবে ।
চলতি দশকে এ বৈশিষ্ট গুলোকে
ব্যাবহার করা হচ্ছে উচ্চতর পরিবেশে বিভিন্ন প্রতিফলিত স্তরের উচ্চতা নিরূপণের কাজে । এজন্যই রাডার থেকে পাওয়া তথ্যকে রিফ্লেক্টিভিটি বা প্রতিবিম্বন ক্রিয়া বলা হয় ।
রাডারের কাজ জানতে হলে ড্রপলার
ইফেক্ট জানতে হবে,
অস্ট্রিয়ান বিজ্ঞানী ড্রপ্লার
১৮৪২ সালে ড্রপ্লার ইফেক্ট আবিষ্কার করেন । এ থিওরি বা সুত্র অনুযায়ী শ্রোতা ও
উৎসের আপেক্ষিক গতির জন্য কম্পাং বা শব্দের তীক্ষ্ণতার আপাত পরিবর্তন ঘটবে ।
একটি সুব্দর উদাহরণ
অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন, অ্যাম্বুলেন্স কাছে আসার সাথে সাথে সাইরেনের শব্দের
তীক্ষ্ণতা বৃদ্ধি পেতে থাকে , কিন্তু আবার দূরে সরে যাওয়ার সাথে সাথে তীক্ষ্ণতা কম
হয়ে প্রতিভাত হয় । ড্রপলারের
তত্ত্ব থেকে আমরা হিসাব করে বের করতে পারি কতটা দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স টি চলছে বা
স্থান পরিবর্তন করছে , সাইরেনের শব্দের
কম্পাংকের স্থান বদলের উপড় নির্ভর করে এই হিসাবটি করা হয় ।
এই সুত্রকে ব্যাবহার করে ড্রপলার ওয়েদার রাডার রাডারের সামনে বা পেছনের
পরিবেশের বৃষ্টিপাতের গতি বের করে দিতে পারে । ড্রপ্লার প্রযুক্তি সহায়তা নিয়ে বাতাসের বেগ বের
করা সম্ভব কেননা বাতাসের স্থান পরিবর্তনের
সাথে বৃষ্টিপাতের তারতম্য হয় ।
পদ্ধতিগত চিত্র |
রাডারের ছবিঃ আবহাওয়া রাডারের
ছবি দেখতে সাধারণত ম্যাপের মত হয়, এ ছবি তৈরি হয় রাডারের পার্শ্ববর্তী কোন অঞ্চল
থেকে আসা প্রতিফলিত তরঙ্গের কারনে । বৃষ্টিপাতের তীব্রতার উপড় নির্ভর করে ম্যাপের
বিভিন্ন অংশ কেমন রঙ ধারণ করবে ।
রাডারের ডিসপ্লের প্রত্যেকটি
রঙ ভিন্ন ভিন্ন পালসের শক্তি থেকে সৃষ্ট প্রতিফলিত রশ্নির জন্য সঙ্গতি পূর্ণ
রাডারের ভাষায় প্রকাশিত হয় । রাডারে ফিরে আসা
পালস গুলোর শক্তিমত্তা , বৃষ্টির কতগুলো কনা রয়েছে ও কনাগুলোর
আকার কিরুপ তার উপড় নির্ভর করে । এবং কনাগুলো কি অবস্থায়
আছে বা কি আকৃতিতে রয়েছে সেটিও প্রকাশ পায় । এ সমস্ত বিষয় ও কারন সম্মন্ধে পূর্ণ
ধারণা পাওয়ার পরেই মাটিতে পরা বৃষ্টি পাতের মাত্রার
কাছাকাছি মান অনুমান করে বের করা হয় ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন