স্বাগতম

মোদের গরব, মোদের আশা, আমরি বাংলা ভাষা |পৃথিবীর সর্বত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাংলাভাষী মানুষের প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই!

বাংলাদেশের ডেনিম ব্যাবসার যাবতীয় (Entire Information About Bangladesh’s Denim Business)

ডেনিম হচ্ছে টেক্সটাইলের ভাষায় টুয়াইল কেন্দ্রিক ফেব্রিক যা প্রধানত জিন্স প্যান্ট তৈরিতে ব্যাবহার করা হয় । ডেনিমে ৬০ থেকে ১০০% তুলা ফাইবার থাকে ।

আমাদের গ্রহ পৃথিবীর একটা অফুরন্ত ভাণ্ডারের নাম এশিয়া” ।এশিয়া পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সরবরাহক অঞ্চল ।সব ধরণের সেক্টরে এ অঞ্চল সিংহভাগের রপ্তানিকারক ।হিসাবে দেখা গেছে যে কোন পণ্যের দুই তৃতীয়াংশের যোগান এশিয়া মহাদেশ থেকেই আসে।



চীন এবং বাংলাদেশ এশিয়ার সেই দুটি দেশ যারা ইউরোপ ও আমেরিকায় ডেনিমের প্রধান রপ্তানিকারকএর মধ্যে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে বেশি। আন্তর্জাতিক খুচরা বিক্রেতারা ক্রমশ ডেনিমের জন্য  বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে । গার্মেন্টস শিল্পের একটি বড় অংশ হিসেবে এদেশে ডেনিম শিল্প  প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রতিবছর বেড়ে চলছে । যদিও জিন্স শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল, অবকাঠামো ও প্রযুক্তি, এ তিনটির কোনটার উপস্থিতিই নেই বাংলাদেশে । তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ কিভাবে ডেনিম জিন্স শিল্পে এগিয়ে চলছে তা রীতিমত বিস্ময়ের ব্যাপার। এ বিস্ময়ের উত্তর আমরা পরে খুঁজব , তার আগে জেনে নেব ডেনিম শিল্পে বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান কি ?

                                                                                                                                              
ইউরোপীয় ইউনয়ন বাংলাদেশ থেকেই এখন সবচেয়ে বেশি ডেনিম ক্রয় করছে । মেক্সিকো ও চীনের পরেই আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি ডেনিম যায় বাংলাদেশ থেকে। ই ইউ এর রপ্তানি বাজারে বাংলাদেশের শেয়ার ২২.৪০% এবং অ্যামেরিকায় ১১.৩৪ % । ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ডেনিম পোশাক রপ্তানি ১২% প্রবৃদ্ধি পেয়েছে । এ প্রবৃদ্ধির প্রধান কারন ,বাংলাদেশ ইউরোপিয় দেশগুলোতে শুল্কমুক্ত রপ্তানির সুযোগ পাচ্ছে যাকে জি এস পি বলে  । অন্য দিকে বাংলাদেশের ব্যাবসায়ীদের প্রোডাকশন খরচ কমানোর ক্ষমতা এ শিল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আরেকটি কারন। প্রায় ৪০০ টি কারখানা নিয়ে গঠিত বাংলাদেশের ডেনিম শিল্প বিশ্বের প্রায় ১০০ টি দেশে ডেনিম জিন্স পৌঁছে দিচ্ছে । ডেনিমের মোট ২৬ টি বড় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান রয়েছে , যাতে সর্বমোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৯০০ মিলিয়ন ডলার।


গত দু বছরে ৬৬ টি আন্তর্জাতিক ডেনিম ব্র্যান্ড বাংলাদেশ থেকে ডেনিম নেয়া শুরু করেছে । বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের বিভিন্ন পণ্যের ৬০ বিলিয়ন ডলারের ব্যাবসা রয়েছে , যার মধ্যে ডেনিমের ব্যাবসা মাত্র ৩.৫ বিলিয়নের ।  বিশ্ববাজারে ২০২১ সালে ডেনিম ৬৫ বিলিয়ন ডলারের ব্যাবসায় পরিনত হবে । সেখানে বাংলাদেশ বছরে ৭ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে । 


পুরো বিশ্বে মোট ডেনিম জিন্সের উৎপাদন প্রায় ৭ বিলিয়ন মিটার , এর মধ্যে ৭০ % এরই জোগান দিচ্ছে এশিয়া । বাংলাদেশ প্রতি মাসে ৩০ মিলিয়ন গজ বিভিন্ন ধরণের ডেনিম কাপড় তৈরি করছে যদিও উৎপাদন চাহিদা ৬০ মিলিয়ন গজের কাছাকাছি ।


রটর সূতা বা ওপেন ইন্ড ইয়ার্ন থেকেই প্রধানত ডেনিম তৈরি হয়ে থাকে । ভারত,পাকিস্থান, চীন , তাইওয়ান ও থাইল্যান্ডের তুলা নির্ভর দেশীয় রটর সূতার শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদার মাত্র ৫০% সরবরাহ করতে সক্ষম । বাকি সূতা বিদেশ থেকেই আমদানি করতে হয় । অন্যদিকে ভাল মানের জিন্সের জন্য প্রয়োজনীয় স্লাব সূতার বেশীরভাগই বিদেশ থেকে নিয়ে আসতে হয় ।  


কিছু কিছু জিন্স তৈরিতে ওয়ারপ ও ওয়েফট উভয় সূতা হিসেবেই স্লাব ব্যাবহার করা হয় । কোর স্পুন ইয়ার্ন যাকে স্টিছ জিন্স প্যান্টে  ব্যবহার করা হয় যেমন ল্যাক্রা সূতার উৎপাদন বাংলাদেশে নেই ।  রং ও অক্সিলিয়ারি কেমিক্যালের জন্য বাংলাদেশ পুরোপুরি বিদেশের উপড় নির্ভরশীল।


এশিয়ার অন্য ডেনিম রপ্তানিকারক দেশ যেমন ভারত,পাকিস্থান ও চীন তাদের নিজস্ব কেমিক্যাল ব্যাবহার করছে । এই ব্যাপারগুলো অবশ্যই তাদের প্রোডাকশন খরচ কমাতে সাহায্য করছে ।

 
বাংলাদেশের অন্যতম ডেনিম ফ্যাক্টরি হা-মিম
ডেনিম লিমিটেডের দীর্ঘ শ্লেশার ডাইং শেড


বাংলাদেশের ৯০% ডেনিমের কাজ বিদেশি ক্রেতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, তারাই মূলত রিসার্স ও ডেভেলপমেন্টের মাধ্যমে ডিজাইন তৈরি করে বাংলাদেশে পাঠায় । যদিও শীর্ষ কিছু ডেনিম প্রতিষ্ঠান কয়েকবছর ধরে নিজেরাই ডিজাইন করা শুরু করেছে । উৎপাদনকারীদের কাছ থেকে নতুনত্বকে বের করে আনার চেষ্টা করছে  । তবে তাদের আর এন্ড ডি ডিপার্টমেন্ট দ্রুততার সাথে ইনোভেটিভ কাজ করতে এখনও পুরোপুরি ব্যার্থ ।


জিন্স বাংলাদেশের জন্য একটি খুবই ইতিবাচক খাত । বিশ্বের প্রতিটি দেশে জিন্স প্যান্টের প্রচলন রয়েছে এবং প্রচলন বৃদ্ধি পাচ্ছে । তাই বলা হয় ডেনিম ই হল পরবর্তী সেই বড় আকারের বিশ্ব ব্যাবসা যা ভবিষ্যতের স্টাইল ও ফ্যাশনের জগতে বড় পরিবর্তন আনতে চলেছে ।


এ শিল্প বিশেষজ্ঞদের ধারণা অচিরেই আগামী ১০ বছরের মধ্যে ৩ গুণ আকারে পৌঁছাবে । ৫ বছরের মধ্যেই ইউরোপীয় চার পাচ টি শীর্ষ ব্র্যান্ডের প্রধান যোগানদাতা হবে বাংলাদেশ ।

তথ্যসুত্রঃ
https://www.textilesintelligence.com
www.quora.com
http://www.thedailystar.net/
http://www.differencebetween.com/
www.thefinancialexpress-bd.com
http://www.fibre2fashion.com/
www.bangladeshdenimexpo.com

২টি মন্তব্য:

  1. Nice one....want more about different denim factories in Bangladesh...

    উত্তরমুছুন
  2. In this new era denim is not within indigo and sulfur black,now it turns to various colors including reactive dyes.But your evaluation about denim is very good.It very nice to read.

    উত্তরমুছুন

 

দর্শক সংখ্যা

বিজ্ঞাপন

যোগাযোগ Amitptec6th@gmail.com

সতর্কবার্তা

বিনা অনুমতিতে টেক্সটাইল ম্যানিয়ার - কন্টেন্ট ব্যাবহার করা আইনগত অপরাধ,যেকোন ধরণের কপি পেস্ট কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং কপিরাইট আইনে বিচারযোগ্য !